সাইবারজগতের সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে ধরা হয় বিভিন্ন ধরনের ম্যালওয়্যারকে। ইংরেজি Malicious Software এর রুপ হলো Malware। এটি একধরনের ক্ষতিকারক প্রোগ্রাম। ম্যালওয়্যার বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। সকল ধরনের ম্যালওয়ার সাইবার নিরাপত্তার জন্য হুমকি। নিচে বিভিন্ন প্রকার সাইবার নিরাপত্তার হুমকিসমূহ আলোচনা করা হলোঃ-
সাইবার নিরাপত্তায় হুমকিসমূহ
অ্যাডওয়ারঃ অ্যাডওয়ারকে সবচেয়ে কম ক্ষতিকর ম্যালওয়্যার ধরা হয়। অ্যাডওয়্যার মূলত বিভিন্নপ্রকার বিজ্ঞাপন দেখায়। আমাদের সকলের উচিত কোন সফটওয়্যার বা প্লাগইন ইনস্টল করার আগে দেখতে হবে সফটওয়্যারটি ভালো না খারাপ। খারাপ সফটওয়্যার বা প্লাগইন ইনস্টল করার মাধ্যমে অ্যাডওয়্যার সিস্টেমে ঢুকে পড়ে। এজন্য আমাদের উচিত ট্রাস্টেড সোর্স ছাড়া কোন প্রাকার সফটওয়্যার বা প্লাগইন ইনস্টল করা ঠিক না।
ভাইরাসঃ ভাইরাস হলো এক ধরনের প্রোগ্রাম, যা সাধারণত অন্য একটি সফটওয়্যারের সাথে সংযুক্ত থাকে এবং পরবর্তীতে পুরো সিস্টেমে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাস সাধারণত সফটওয়্যার বা ফাইল আদান প্রদানের সময় এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে। হোস্টিং অ্যাকাউন্ট নিরাপদ রাখতে হলে কখনো ভাইরাসযুক্ত ফাইল আপলড করা ঠিক না।
র্যানসমওয়্যারঃ র্যানসমওয়্যার হলো সম্পূর্ণ সিস্টেমকে লক করে দেয় এবং আনলক করার জন্য টাকা চায়। এটি বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি আলোচিত সাইবার নিরাপত্তা হুমকি।
ব্যাকডোরঃ ব্যাকডোর এমন একটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে একজন হ্যাকার কিংবা স্প্যামার অন্য কারো নেটওর্য়াক সংযোগ ব্যবহার করতে পাড়ে।
কী-লগারঃ কী লগারের কাজ হলো কম্পিউটারে যা টাইপ করা হয় (যেমন- ইউজার আইডি,পাসওয়্যাড,মোবাইল নাম্বার,ই-মেইল অথবা যে কোন তথ্য) সবকিছু রেকর্ড করবে এবং পরবর্তীতে কী লগারের প্রোগ্রামারকে সব তথ্য পাঠিয়ে দেয়।
রুট-কিটঃ এটি একধরনের ভয়ানক ম্যালওয়্যার। সহজে এটি ধরা যায় না। রুট কিট অন্য ম্যালওয়্যারকে লুকিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
স্পাইওয়্যারঃ স্পাইওয়্যার বলতে মূলত স্পাই করা বুঝায়। এটি ইন্টারনেট অ্যাকক্টিভিটিস থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু নজরদারি করে থাকে।
ট্রোজান হর্সঃ ট্রোজান হর্স এই সময়ের সবচাইতে ভয়ঙ্কর ম্যালওয়্যার। এটি আর্থিক তথ্য চুরি করে এবং সিস্টেমের রিসোর্স ব্যবহার করে।ট্রোজন হর্স বড় কোন সিস্টেম হলেও সিস্টেমকে ডাউন করে দিতে পারে।
ওয়ার্মঃ ওয়ার্ম এক ধরনের খাদক। ওয়ার্ম এর খাবার হলো প্রয়োজনীয় ফাইল। একটি ড্রাইভে যখন প্রবেশ করে তখন এটি আস্তে আস্তে সম্পূর্ণ ড্রাইভটি খালি করে ফেলে।
ফিশিংঃ অনেক সময় আমাদের লোভনীয় অফার দিয়ে ই মেইল করে। ব্যাংক পরিচিতি কোন প্রতিষ্ঠান এবং বন্ধুর নাম দেখে মেইল খুলে ক্লিক করা হয়। ফিশিং ই-মেইলগুলো ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে। এজন্য আমাদের সতরর্ক থাকতে হবে অপরিচিত বা সন্দেহজনক ই মেইল ওপেন করা থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে।
সাইবার নিরাপত্তার পদক্ষেপ
সাইবারজগতে ব্যক্তিগত কিংবা প্রতিষ্ঠানকে নিরাপদ রাখার জন্য নিম্নোক্ত বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে-
১। ইমেইল অ্যাড্রেস,ক্রেডিট কার্ড ,পাসপোর্ট,ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ,আইডি কার্ড,ড্রাইভিং নাম্বার ইত্যাদি শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে আমাদের।
২। সকল অ্যাকাউন্ট এর ইউজার নেম এবং পাসওয়্যার্ড একই না রেখে ভিন্ন ভিন্ন রাখা, যাতে একটি অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলেও অন্য অ্যাকাউন্ট হ্যাক হবে না।
৩। অত্যান্ত ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও সোশাল মিডিয়াতে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪। ব্যবসায়িক তথ্য লেন দেনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন কারা।
৫। সোশ্যাল মিডিয়াতে স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা সবার জন্য উন্মক্ত না রাখা।
৬। সোশ্যাল মিডিয়াতে অপনিন্দা এবং অপপ্রচার থেকে বিরত থাকা।
৭। অপরিচিত ওয়েবসাইট ভিজিট এবং সেখান থেকে ফ্রি সফটওয়্যার ডাউনলোড না করা।
৮। ইন্টারনেটে ডকুমেন্ট শেয়ার করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বাছাইকৃত মানুষের দেখার সুযোগ দেওয়া।
৮। ইন্টারনেটে ডকুমেন্ট শেয়ার করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বাছাইকৃত মানুষের দেখার সুযোগ দেওয়া।
৯। পাবলিক প্লেসগুলোতে পাবলিক ওয়াই ফাই কানেক্টেড না করা।
১০। কোন ওয়েবসাইতে লগইন বা রেজিস্ট্রেশন করার সময় দেথে নেওয়া ও যে সাইটটি সিকিউরড কি না অর্থাৎ HTTPS ব্যবহার করছে কি না।
১১। সোসাল মিডিয়া এবং ইমেইলসহ সকল সাইতে টু স্টেপ অথেন্টিকেশন চালু রাখা
১২। স্মার্টফোন,ল্যাপটপ,ডেস্কটপ এ সবসময় ভালো মানের এন্টিভাইরাস ইনস্টল রাখা এবং নিয়মিত আপডেট করা।
১৩। আন অথেনটিক কোন প্রিন ড্রাইভ পিসিতে সংযোগ না করা। করলেও ভালো করে স্ক্যান করে নেওয়া।
১৪। ইমেইল অথবা এসএমএস এর মাধ্যমে আসা কোন লটারি অথবা অন্যকোন অফারের লিংকে ক্লিক না করা।